ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
⚡৩ মিনিটে পড়ুন
দুবাইতে মজলিস ব্র্যান্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি একটি হালাল-ব্রিউড পানীয় (মদ) চালু করেছে। এই পানীয়টি দেশটির ঐতিহ্যবাহী একটি পানীয়কে ব্রিউং পদ্ধতির মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অ্যালকোহলমুক্ত এবং হালাল হিসেবে স্বীকৃত। এই নতুন নন-অ্যালকোহলিক পানীয়টির নাম দেওয়া হয়েছে "মজলিস প্রিমিয়াম অ্যারাবিয়ান আলে"।
মজলিস প্রিমিয়াম অ্যারাবিয়ান আলের উদ্ভাবক এবং মিডটাউন ফ্যাক্টরির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইগর সেরগুনিন এই পানীয় তৈরির পেছনের অনুপ্রেরণা সম্পর্কে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "আমরা এই পণ্যটি তৈরি করেছি কারণ এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। হাজার হাজার বছর আগে আরব উপদ্বীপে মানুষ এই ধরনের পানীয় তৈরি করত, যা অ্যালকোহলমুক্ত ছিল এবং হজমে সহায়ক বলে বিবেচিত হতো। এটি তৈরি করতে তাদের দুই থেকে তিন দিন সময় লাগত, এবং ভ্রমণকারীরা এটি পান করতেন কারণ এটি তাদের শক্তি দীর্ঘ সময় ধরে বজায় রাখতে সাহায্য করত।"
মজলিসের এই পানীয় তৈরির প্রক্রিয়াটি ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি অনুসরণ করে করা হয়েছে। তবে এটি হালাল কিনা তা নিশ্চিত করতে পানীয়টিতে ব্যবহৃত উপাদানগুলোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এতে মল্ট, পানি, খামির এবং হপস ব্যবহার করা হয়, যা একসাথে ভিটামিন বি১, বি৬, বি১৫, সি এবং ডি এর মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
সেরগুনিন আরও যোগ করেন, "আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত করি যে আমাদের সমস্ত পণ্য হালাল।" তাদের প্রতিষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কঠোর পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হালাল সনদপত্র অর্জন করেছে।
এই পানীয়টি তৈরি করতে প্রচলিত ব্রিউং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, তবে অ্যালকোহল সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করা হয়েছে। সেরগুনিন বলেন, "আমরা যত্ন সহকারে হালাল নির্দেশিকা অনুসরণ করি এবং মজলিসের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে পানীয়টিকে অ্যালকোহলমুক্ত রাখি। এই পদ্ধতি একটি ব্রিউড পানীয়ের আসল স্বাদ এবং জটিলতা বজায় রাখার পাশাপাশি হালাল নীতির অখণ্ডতা রক্ষা করে।"
সেরগুনিনের মতে, মজলিসের ধারণাটি তার সন্তানদের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তা থেকে উদ্ভূত হয়েছে। তিনি বলেন, "আমার সন্তানদের জন্য পানীয় কিনতে গিয়ে আমি এই ধারণা পেয়েছি। যখন আমি বিভিন্ন পানীয়ের উপাদানগুলো পরীক্ষা করলাম, তখন দেখলাম যে সেগুলোর বেশিরভাগই প্রক্রিয়াজাত এবং অস্বাস্থ্যকর। তাই আমি এমন একটি পানীয় তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিলাম যা সবার জন্য উপকারী হবে।"
এই চিন্তা থেকে তারা পুষ্টিবিদদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে পানীয়টির রেসিপি পরিমার্জন করেছেন। মজলিসের পানীয়গুলোতে কোনো প্রক্রিয়াজাত চিনি ব্যবহার করা হয় না। এই পানীয়টি পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন স্বাদে পাওয়া যায়। সেরগুনিন বলেন, "আমাদের পানীয়গুলোর শর্করা প্রাকৃতিক উৎস থেকে আসে।"
মজলিসের এই পানীয়টি ঐতিহ্যবাহী এনার্জি ড্রিংকস বা শক্তি পানীয়ের একটি বিকল্প হিসেবে কাজ করে, যা টেকসই শক্তি সরবরাহ করে। সেরগুনিন বলেন, "আমাদের পানীয় আপনাকে দীর্ঘস্থায়ী শক্তি দেবে।"
ব্র্যান্ডের নাম সম্পর্কে সেরগুনিন বলেন, "মজলিস নামটি সমাবেশ বা জমায়েতের ধারণাকে প্রতিফলিত করে। মজলিস শব্দের অর্থ হলো 'সম্মিলন'। এর অর্থ হলো একত্রিত হওয়া এবং আমাদের হালাল-ব্রিউড পানীয় উপভোগ করার জন্য একত্রিত হওয়া।"
তথ্যসূত্র: খালিজ টাইমস।
