২৬শে ফেব্রুয়ারি, মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলার বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের কাছে শিবম বরগাইয়া তার পোষা জার্মান শেফার্ড, বেন্থোকে নিয়ে বাড়ির বাইরে হাঁটছিলেন। ঠিক তখনই কাছের জঙ্গল থেকে একটি বাঘ গ্রামে ঢুকে পড়ে।
শিবম যখন বাঘটিকে দেখতে পান, তখন সেটি ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগিয়ে আসছিল, যেন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভয়ে শিবম হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে বেন্থো জোরে জোরে ঘেউ ঘেউ করতে শুরু করে এবং এক মুহূর্তও না ভেবে বাঘটিকে তাড়ানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বেন্থো বুঝতে পারেনি যে, সে যাকে তাড়া করতে যাচ্ছে, সেই বাঘ তার চেয়ে অনেক বড় এবং শক্তিশালী। এসব তার কাছে কোনো গুরুত্বই পায়নি। সে শুধু দেখেছিল, তার প্রভু বিপদে! নিজের জীবনকে এক মুহূর্তের জন্যও তোয়াক্কা না করে সে বাঘের মুখোমুখি হয়।
বাঘটি বাধা দিতে বেন্থোর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, তার ধারালো নখর দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করে এবং টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বেন্থো হাল ছাড়েনি, সে প্রাণপণে লড়াই চালিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত, বাঘটি ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেয় এবং জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়।
তবে ততক্ষণে বেন্থো মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। বাঘটি পালানোর পরপরই সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এক মুহূর্ত দেরি না করে, শিবম তাকে ২৫ কিলোমিটার দূরে উমারিয়ার পশুচিকিৎসা ক্লিনিকে নিয়ে যান। চিকিৎসা শুরু হলেও, প্রচণ্ড রক্তক্ষরণের কারণে বেন্থোকে আর বাঁচানো যায়নি। ক্লিনিকেই তার মৃত্যু হয়।
সাহসী বেন্থোর মৃত্যুতে শিবম ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, "আজ আমি যে বেঁচে আছি, তার সব কৃতিত্ব বেন্থোর। যদি সে না থাকত, আমি হয়তো আজ বেঁচে থাকতাম না। আমার জীবন তার কাছে চিরঋণী।"
