রংপুরের মিঠাপুকুরে সদ্য ঘোষিত বিএনপির ইউনিয়ন কমিটিতে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী এবং যুবলীগের এক নেতাকে পদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে, যা স্থানীয় বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ওই যুবলীগ নেতার নাম রওজার হোসেন শয়ন, যিনি ভাংনী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। তাকে সদ্য ঘোষিত বিএনপির ওই ওয়ার্ডের যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে। অপরদিকে, আওয়ামী লীগ কর্মী ইদ্রিস আলী লায়ন, যিনি অতীতে দলীয় নির্বাচনী কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন, তাকে বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ভাংনী ইউনিয়নের বিএনপি ২নং ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়। বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক মাহবুব আলম ও সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ হাই স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই নিয়োগের ঘোষণা আসে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এই কমিটি গঠিত হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, ইদ্রিস আলী লায়ন বিগত জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করতেন এবং ভোট ডাকাতির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। অনেকেই তাকে আওয়ামী লীগের ক্যাডার হিসেবে জানতেন, অথচ এখন তিনি বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছেন। একইভাবে, রওজার হোসেন শয়নও আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করতেন এবং তিনি নৌকার পক্ষে ভোট পরিচালনায় সক্রিয় ছিলেন।
এ বিষয়ে রওজার হোসেন শয়ন ও ইদ্রিস আলী লায়নের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা, যিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, তিনি বলেন, "একসঙ্গে রাজনীতি করেছি, এখন দেখি আমার সহযোদ্ধারা বিএনপির নেতা হয়ে গেছে। এটা কিভাবে সম্ভব বুঝতে পারছি না।"
ভাংনী ইউনিয়নের বিএনপির এক নেতার ভাষ্য, "রওজার হোসেন শয়ন ও ইদ্রিস আলী লায়ন দুজনই আওয়ামী লীগের ক্যাডার, এটা সবার জানা। কিন্তু সেক্রেটারি প্রার্থী মোসলেম ও সভাপতি মাহবুব আলম দলীয় নির্বাচনে সুবিধা পাওয়ার জন্য তাদের কমিটিতে স্থান দিয়েছে।"
ভাংনী ইউনিয়নের তৎকালীন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল হামিদ হাই জানান, "কমিটির সবকিছু সভাপতি করেছেন, আমি এদের ভালোভাবে চিনি না।"
বিএনপির ভাংনী ইউনিয়ন শাখার বর্তমান সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, "রওজার হোসেন শয়নের ব্যাপারে বিস্তারিত জানি না। যারা তাকে সুপারিশ করেছে, তাদের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারব। আর ইদ্রিস আলী লায়ন ২০১০ সাল থেকেই বিএনপির ২নং ওয়ার্ডের সেক্রেটারি ছিলেন।"
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোতাহারুল ইসলাম নিক্সন বলেন, "আওয়ামী লীগের লোক বিএনপিতে পুনর্বাসিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।"
----------------------------------------
%20(1).png)