Type Here to Get Search Results !

‘স্যার’ সম্বোধন না করার কারণে এসপির যা ঘটনা ঘটালেন

 

পুলিশ সুপার (এসপি) আফম আনোয়ার হোসেন খান। ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জে পুলিশ সুপারের হুমকি: ‘স্যার’ না বলায় নেতাকে ঘাড় ধরে বের করে দেওয়ার হুমকি, ভাইরাল ভিডিওতে তোলপাড়



সুনামগঞ্জে পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খানের বিরুদ্ধে গণ অধিকার পরিষদের এক নেতাকে ‘স্যার’ সম্বোধন না করায় ঘাড় ধরে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংঘটিত এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিডিওটিতে পুলিশ সুপারের উত্তেজিত আচরণ ও বিতর্কিত মন্তব্য প্রকাশ্যে আসায় স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় গণ অধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ সুপারের পদত্যাগ বা বদলির দাবি জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেন, সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান নেতা এম এস মাসুম আহমদসহ অন্য কর্মীদের সঙ্গে অমর্যাদাকর ভাষায় কথা বলেন এবং কার্যালয় থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়ার হুমকি দেন।

ভাইরাল ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশ সুপারের সামনে বসা গণ অধিকার পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি উচ্চস্বারে তর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। একপর্যায়ে তিনি নেতা মাসুম আহমদকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমি যদি আজ চাকরি ছাড়ি, কালই বিএনপি থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারব। আপনারা যতই পণ্ডিতি দেখান না কেন, এখনই এখান থেকে বের হয়ে যান। নাহলে ঘাড় ধরে বের করে দেব!” এছাড়াও তিনি দাবি করেন, বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত যোগাযোগ রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মাসুম আহমদ বর্ণনা দেন, “জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পর একটি মামলার অগ্রগতি জানতে পুলিশ সুপারকে ফোন করি। তিনি অফিসে ডাকলে আমরা গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন এবং অফিস থেকে জোর করে বের করার হুমকি দেন।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, পুলিশ সুপার তার পদমর্যাদার অপব্যবহার করে বলেছেন, “আমি ইচ্ছা করলেই কাল এমপি হতে পারি!”

গণ অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি শাহাবুদ্দিন শিহাব, সাবেক আহ্বায়ক হান্নান আশিকসহ অন্যান্য নেতারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “এসপির এমন অহংকারী আচরণ জনগণের সেবক হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। তার অবিলম্বে অপসারণ দাবি করছি।”

ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাদা কথোপকথনে দাবি করেন, “ওই নেতারা প্রথমে আমার অফিসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় আমি রেগে যাই। পরে তারা নিজেরাই ক্ষমা চেয়েছেন।” তবে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সুপার অভিযোগ করেছেন যে ভিডিওটিতে শুধু তার রাগান্বিত প্রতিক্রিয়াটুকুই প্রকাশ করা হয়েছে, পুরো ঘটনার প্রেক্ষাপট নয়।

এ ঘটনায় স্থানীয় পর্যায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে, প্রশাসনের একাংশ মনে করছেন, এ ধরনের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনগণের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.