যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর এবার পাল্টা জবাব দিয়েছে তেহরান। ইরানের সশস্ত্র বাহিনী জানায়, ‘অপারেশন অনেস্ট প্রমিস ৩’-এর ২০তম ধাপে তারা একযোগে ইসরায়েলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, ইরান此次 হামলায় ব্যবহার করেছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, যেগুলো তরল ও কঠিন জ্বালানির সংমিশ্রণে চালিত এবং অত্যন্ত শক্তিশালী বিস্ফোরক ক্ষমতাসম্পন্ন।
ইরানি সেনাবাহিনীর দাবি অনুযায়ী, যেসব স্থাপনায় আঘাত হানা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, একটি জীবাণু গবেষণা কেন্দ্র, সরবরাহ ঘাঁটি, এবং একাধিক কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র।
এছাড়াও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার লক্ষ্য ছিল তেল আবিব, হাইফা এবং নেস সিয়োনার আবাসিক এলাকাগুলো। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, এসব এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ও ভয়াবহ আগুন দেখা গেছে।
এই হামলা এমন সময়ে ঘটল, যখন পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আগেই ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছিল— ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের জবাব তারা কৌশলগতভাবেই দেবে। সেই হুঁশিয়ারিরই বাস্তব প্রতিফলন যেন এই সামরিক অভিযান।
বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে নেস সিয়োনার ‘জীবাণু গবেষণা কেন্দ্র’। বহুদিন ধরে গোপন সামরিক গবেষণার অভিযোগে বিতর্কিত এ কেন্দ্র এবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মূল লক্ষ্যবস্তু ছিল। এটি সরাসরি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় এবং সামরিক প্রয়োজনে রাসায়নিক ও জীবাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ রয়েছে।
এই গবেষণাগারটির বর্তমান পরিচালক শমুয়েল ইয়িৎসহাকি, যিনি ২০২১ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। সেখানে শত শত পিএইচডি ডিগ্রিধারী বিজ্ঞানী কাজ করছেন, যাদের অধিকাংশ প্রকল্পই গোপনীয় এবং সামরিক উদ্দেশ্যপ্রসূত।
ডাচ সাংবাদিক কারেল নিপ জানিয়েছেন, এখানে নার্ভ গ্যাস, পক্ষাঘাত ঘটাতে সক্ষম রাসায়নিক উপাদান, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার ওপর গোপনে পরীক্ষা চালানো হয়। যদিও প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে, তাদের গবেষণা প্রতিরক্ষামূলক ও বেসামরিক প্রয়োজনে।
ইরানের ভাষ্য মতে, এই হামলা ছিল অত্যাচারী শক্তির বিরুদ্ধে নিপীড়িত জাতির ন্যায্য প্রতিরোধ।
